
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সভাপতি দেশরত্ন
শেখ হাসিনার আহ্বান- ‘হুটাও ইউনূস, বাঁচাও দেশ’
জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে উদ্ভাসিত স্বদেশভূমি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে এবং বাংলাদেশের গণতন্ত্র, শান্তি, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে অবৈধ দখলদার ফ্যাসিস্ট ইউনূসের নেতৃত্বে উগ্র-সাম্প্রদায়িক অগণতান্ত্রিক অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।
প্রিয় দেশবাসী,
..বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা
গত ৫ আগস্ট স্বাধীনতাবিরোধী- বাংলাদেশ বিরোধী, কট্টর ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক ও সশস্ত্র জঙ্গিরা দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের মাধমে বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকারকে জোরপূর্বক অপসারণ করে। শুধু রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের হিংস্র বাসনায় পরিকল্পিতভাবে এই ষড়যন্ত্রকারীরা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ, বানোয়াট ও গুজব প্রচারের মাধ্যমে দেশের সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করে দেশে অস্থিতিশীলতা ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থার অবনতি ঘটিয়ে ও জনজীবনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ভয়াবহ অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির মাধ্যমে কোমলমতি শিক্ষার্থী ও শত শত সাধারণ মানুষকে পরিকল্পিতভাবে নির্বিচারে হত্যা করে। এছাড়া মেট্রোরেল, বাংলাদেশ টেলিভিশন, সেতুভবন, ডেটা সেন্টার ও হাসপাতালে ভয়াবহ অগ্নিসংযোগ, গণভবন, মহান জাতীয় সংসদ, স্কুল-কলেজ, শিল্প-কারখানা, বসতবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানের জেলখানা ভেঙ্গে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনসমূহের দুর্ধর্ষ জঙ্গিদের ছিনিয়ে নিয়ে যায়। ৪শ’ টিরও অধিক থানা ও শত শত পুলিশ ফাঁড়িতে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে হাজার হাজার আগ্নেয়াস্ত্র লুট করে। পুলিশ বাহিনীর হাজার হাজার সদস্যকে নিষ্ঠুরভাবে ও নির্মমভাবে হত্যা করে। মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল সাধারণ মানুষ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর উপর আক্রমণ ও হত্যাযজ্ঞ, হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের উপানালয়ে হামলা-ভাঙচুর, হাজার হাজার মানুষকে পৈশাচিকভাবে হত্যা ও অসংখ্য নারীকে ধর্ষণের এক অকথ্য নির্মম-রক্তাক্ত-বিপন্ন নিকষ কালো অধ্যায়ের সৃষ্টি করে। অথচ ফ্যাসিস্ট ইউনূস সরকার নির্লজ্জভাবে সকল চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও অপরাধীদের দায়মুক্তি প্রদান করে। স্বাধীনতাবিরোধী- বাংলাদেশ বিরোধী- ‘৭১-র মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী বর্বর পাকিস্তানী বাহিনীর দোসর এই বিশ্বাসঘাতক চক্র বাছ-বিচারহীনভাবে মানুষের ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ পুরো বাংলাদেশে নারকীয় তাণ্ডব চালিয়ে পোড়ামাটি নীতি গ্রহণ করে । এখানেই এই বর্বর গোষ্ঠীর হিংস্র থাবা ও ধ্বংসযজ্ঞ থেমে থাকেনি। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন ‘সুধা সদন’ ও শেখ রেহানার বাসভবনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এমনকি মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার সকল চিহ্নকে নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, বাঙালি জাতির নয়নের মণি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত বাড়িটিকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়। স্বাধীনতার স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন থেকেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন। সেই ৩২ নম্বরের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ বাঙালি জাতির জন্মের ইতিহাস ও অস্তিত্বের উপর আঘাত। সারাদেশে জাতির পিতার নিরীহ ও নিস্পৃহ ভাস্কর্য পর্যন্ত তারা ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়। সারাদেশে জঙ্গি তৎপরতা, হামলা-অগ্নিসংযোগ, নির্বিচারে গণহত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশ বিরোধী, জঙ্গি ও উগ্র-সাম্প্রদায়িক পাকিস্তানপন্থী অপশক্তি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচিত আওযামী লীগ সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করে নেয়।
দেশপ্রেমিক দেশবাসী,
আপনাদের নতুন করে কিছু বলার নেই। ইতিমধ্যে আপনারা জেনে ও বুঝে গেছেন, জোরপূর্বক ক্ষমতাদখলকারী মুহাম্মদ ইউনূস ও তার উগ্রপন্থী জঙ্গি দোসরদের ভয়াবহ অত্যাচার, নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ, রাষ্ট্রীয় সম্পদের সীমাহীন লুটপাট, রাষ্ট্রীয় অর্গানগুলো ব্যবহার করে নির্বিচারে সাধারণ মানুষের ওপর নারকীয় তাণ্ডবে সারাদেশ একটি বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে। চতুর্দিকে ক্ষুধার্ত ও বিপন্ন মানুষের আর্তনাদ, হাহাকার আর কান্নার রোল বিশ্ব বিবেককে থমকে দিচ্ছে ।
প্রিয় দেশবাসী,
স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট,পাকিস্তানি ভাবাদর্শের চরমপন্থী জঙ্গি নেতা ইউনূস ও তার দোসররা গত ৫ মাসে বাংলাদেশেকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিয়েছে। বিশ্বাসঘাতক রক্তপিপাসু মুহাম্মদ ইউনূসের প্রলয় নৃত্যে বাংলাদেশ এখন এক মৃত্যু উপত্যকা ও বিরাণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। তাদের প্রতিহিংসা, প্রতিশোধ আর ঘৃণার আগুনে পুরো বাংলাদেশ এখন দাউ দাউ করে জ্বলছে। প্রশ্ন উঠেছে ৩০ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে প্রাপ্ত প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্ব কি আদৌ টিকে থাকবে? ইতিমধ্যে দেশের প্রশাসন, পুলিশ, বিচার ব্যবস্থা, শিক্ষা ব্যবস্থা, আনসার, বিজিবিসহ অন্যান্য প্রতিরক্ষাবাহিনী ধ্বংস হয়ে গেছে। অসংখ্য শিল্প-কারখানায় লুটপাটের পাশাপাশি অগ্নিসংযোগ করে ভস্মীভূত করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে দেশের হাজার হাজার শিল্প-কারখানা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষ এখন কর্মহীন বেকার। সারাদেশ এখন অপরাধের স্বর্গরাজ্য। অবাধে লাগামহীনভাবে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, দখল, চাঁদাবাজি লুটপাট চলছে। গার্মেন্টসে নারী কর্মীদের কাজ না থাকায় তারা এখন কর্মহীন। প্রকাশ্য দিবালোকে মবসন্ত্রাস করে, গলায় ছুরি চালিয়ে, মাথাসহ বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কেটে নিয়ে শত শত নিরপরাধ মানুষসহ আওযামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্মমভাবে হত্যা করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ সন্ত্রাস সৃষ্টি করে, জীবননাশের হুমকি দিয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালত, মানুষের বিচার প্রত্যাশার সর্বশেষ ভরসাস্থল সুপ্রিম কোর্টের মহামান্য প্রধান বিচারপতিসহ অন্যান্য বিচারপতিদের পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। আইন-আদালত তথা বিচার ব্যবস্থা বলতে দেশে আর কিছু অবশিষ্ট নেই। একইভাবে পুলিশি ব্যবস্থাকেও তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। পুলিশের চেইন অব কমান্ড ভেঙে ১৫/২০ বছর আগে অবসরে যাওয়া অযোগ্য ও কুখ্যাত দুর্নীতিবাজ অবসরপ্রাপ্ত ও বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তিদের পুলিশ প্রধানসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে অনৈতিকভাবে ও অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়ে সম্পূর্ণভাবে পুলিশ বাহিনীকে ধ্বংস করা হয়েছে। আনসার বাহিনীর সদস্যদের উপর হামলা ও তাদের অনেককে হত্যা করা হয়েছে। এর চেয়েও ভয়াবহ চিত্র প্রশাসনে। রাষ্ট্র পরিচালনার হৃৎপিণ্ড সচিবালয়ের প্রশাসনিক কাঠামোও ফ্যাসিস্টরাজ ইউনূস ও তার দোসররা সম্পূর্ণ ধ্বংস করে ফেলেছে। নিজেদের দুর্নীতির তথ্য-প্রমাণ বিনষ্ট করার দুরভিসন্ধি নিয়ে ফ্যাসিস্ট ইউনূস সরকার সচিবালয়ে পর্যন্ত অগ্নিসংযোগ ঘটায়। ফলে দেশজুড়ে চলছে বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য।